শনিবার, ১৩ জুন, ২০২০

সিবত্বতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহাস সালাম উনার উনার সম্মানিত সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক-২
মুহম্মদ আল আমীন

মহাসম্মানিত নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহাস সালাম উনার মহসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের ৪ বছর ২ দিন পর ১১ হিজরী সনের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই রবী‘উল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৪ বছর ২ দিন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত ১১ হিজরী সনের সম্মানিত ৩রা রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আ’যীম শরীফ বা’দ আছর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহাস সালাম উনার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৪ বছর ৫ মাস ২৩ দিন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত আযীমুশ শান প্রথম নিসবতে আযীম শরীফ:
কিতাব-এ বর্ণিত রয়েছে,
وخطبها أمير المؤمنين عمر بن الخطاب رضي الله عنه إلى عليّ فقال إنها صغيرة فقال له زوجنيها يا أبا الحسن فإنّي أرصد من كرامتها ما لا يرصده أحد فقال له علي رضي الله عنه أنا أبعثها إليك فإن رضيتها فقد زوجتكها فبعثها إليه بردّ وقال لها قولي له هذا الرّدّ الّذي قلت لك فقالت ذلك لعمر فقال قولي له رضيت رضي الله عنك
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ করার বিষয়ে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার নিকট প্রস্তাব পেশ করেন। তখন তিনি বলেন, নিশ্চয়ই দুনিয়াবী দৃষ্টিতে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনার সম্মানিত বসয় মুবারক অল্প। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, হে সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল হাসান আলাইহিস সালাম! দয়া করে আপনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনাকে আমার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ সম্পন্ন করে দিন। কেননা, নিশ্চয়ই সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনার সম্মানার্থে আমি এমনভাবে প্রতীক্ষা করছি, যেরূপ প্রতীক্ষা আর কেউ করেনি। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে বললেন, আমি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনাকে আপনার নিকট পাঠাবো। যদি আপনি উনাকে খুশি করতে পারেন, তাহলে অবশ্যই আমি উনাকে আপনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ দিবো। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নিকট জবাব দিয়ে পাঠালেন। আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনাকে বলে দিলেন যে, আপনি সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে এই জবাবের কথা বলবেন, যা আমি আপনাকে বললাম। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম তা সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নিকট বললেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, দয়া করে আপনি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে বলুন যে- আমি খুশি হয়েছি, মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার প্রতি খুশি হউন।” সুবহানাল্লাহ! (ইমতা‘উল আসমা’ ৫/৩৬৯)
‘মুসনাদুল ফারূক্ব’ নামক কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, 
أنَّ عمرَ بن الخطاب رضي الله عنه لما خَطَب أُمَّ كلثوم بنتَ عليِّ بنِ أبي طالب، قال له عليٌّ رضي الله عنه إنها صغيرةٌ فقال إني سَمِعتُ رسولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يقول كلُّ سَبَبٍ وَنَسَبٍ منقطعُ يومَ القيامةِ إلا سَبَبي وَنَسَبيগ্ধ، فأحببتُ أن يكونَ لي من رسولِ الله صلى الله عليه وسلم سَبَبٌ وَنَسَبٌ. فزوَّجه عليّ رضي الله عنه
অর্থ: “যখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ করার বিষয়ে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার নিকট প্রস্তাব পেশ করেন,  তখন সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, নিশ্চয়ই দুনিয়াবী দৃষ্টিতে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনার সম্মানিত বসয় মুবারক অল্প। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, নিশ্চয়ই আমি শুনেছি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, ‘প্রত্যেক সম্পর্ক এবং বংস কিয়ামতের দিন ছিন্ন হয়ে যাবে। একমাত্র আমার সম্পর্ক মুবারক এবং বংস মুবারক ব্যতীত। তাই আমি এটা পছন্দি করি, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সববগত এবং নসবগত দিক থেকে আমার একটা নিসবত মুবারক থাকুক। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ সম্পন্ন করে দেন।” সুবহানাল্লাহ!
মূলত, ১৭ হিজরী শরীফ-এ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ সম্পন্ন হয়। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ১০ বছর। সুবহানাল্লাহ!
বর্ণিত রয়েছে, 
أن زواجهما كان في شهر ذي القعدة في السنة السابعة عشرة للهجرة. 
অর্থ: “নিশ্চয়ই উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৭ হিজরী শরীফ উনার সম্মানিত যিলক্বদ শরীফ মাসে।” সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত মোহরানা মুবারক
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
 عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْأَنْصَارِيِّ قَالَ ্রتَزَوَّجَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ أُمَّ كُلْثُومٍ بِنْتَ فَاطِمَةَ بِنْتِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى أَرْبَعِينَ أَلْفِ دِرْهَمٍগ্ধ
অর্থ: “হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে যাহরা আলাইহিমাস সালাম উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি ৪০ হাজার দিরহাম সম্মানিত মোহরানা মুবারক দিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (ফাওয়াইদুশ শাহীর ১/১৬৬, মুখতাছারু তারীখে দিমাশক্ব ৩/২৪৫, আল মুন্তায¦াম ফী তারীখিল মুলূক ওয়াল উমাম ৪/২৩৭ ইত্যাদি)
অপর বর্ণনায় রয়েছে,
أما السيدة أم كلثوم بنت فاطمة فتزوجها عمر بن الخطاب وكان مهرها أربعين ألف دينار.
অর্থ: “আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে যাহরা আলাইহিমাস সালাম। উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ করেন এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে যাহরা আলাইহিমাস সালাম উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি ৪০ হাজার দীনার (স্বর্ন মুদ্রা) সম্মানিত মোহরানা মুবারক দেন।” সুবহানাল্লাহ! (রহমতুল্লিল আলামীন ১/৩৬৩)

সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খুশি মুবারক প্রকাশ:
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
أَنَّهُ لَمَّا تَزَوَّجَ أُمَّ كُلْثُومٍ بِنْتَ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ أَمَا وَاللَّهِ مَا بِي إِلَّا إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ كُلُّ سبَبٍ ونَسب فَإِنَّهُ مُنْقَطِعٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلَّا سَبَبِي وَنَسَبِي.
অর্থ: “নিশ্চয়ই সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনাকে (সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম) তিনি যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ করেন, তখন তিনি বলেন- সাবধান! মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ করার প্রয়োজন ছিলো না। তবে নিশ্চয়ই আমি শুনেছি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, ‘প্রত্যেক সম্পর্ক এবং বংস কিয়ামতের দিন ছিন্ন হয়ে যাবে। একমাত্র আমার সম্পর্ক মুবারক এবং বংশ মুবারক ব্যতীত।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে ইবনে কাছীর ৫/৪৯৬)
অপর বর্ণনায় রয়েছে,
فجاء عمر رضي الله عنه إلى مجلس المهاجرين في الروضة وكان يجلس فيها المهاجرون الأولون فجلس إليهم فقال رفئوني فقالوا بما ذا يا أمير المؤمنين قال تزوجت أم كلثوم بنت علي بن أبي طالب.
অর্থ: “অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার পাশে হযরত মুহাজির ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের বসার স্থানে যেখানে হযরত মুহাজিরুল আউওয়ালূন রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা বসেছিলেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি উনাদের নিকট বসে বললেন, আমাকে সম্মান করুন। তখন উনারা বললেন, হে সাইয়্যিদুনা হযরত আমীরুল মু’মিনীন আলাইহিস সালাম! কী কারণে? সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, কারণ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনাকে আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ করিছে।” সুবহানাল্লাহ! (ইমতা‘উল আসমা’ ৫/৩৬৯)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
وعَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رضي الله عنهما قَالَ: لَمَّا تَزَوَّجَ عُمَرُ رضي الله عنه أُمَّ كُلْثُومٍ بِنْتَ عَلِيٍّ رضي الله عنه قَالَ أَلَا تُهَنُّونِي؟ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ كُلُّ سَبَبٍ وَنَسَبٍ مُنْقَطِعٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ غَيْرَ سَبَبِي وَنَسَبِي
অর্থ: “হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে নিসবতে আযীম শরীফ করেন, তখন তিনি বলেন, আপনারা কি আমাকে অভিনন্দন জানাবেন না? নিশ্চয়ই আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন সমস্ত সবব তথা সম্পর্ক এবং নসব বিছিন্ন হয়ে পড়বে একমাত্র আমার সবব এবং নসব মুবারক ব্যতীত। সুবহানাল্লাহ! (আল জামি‘উছ ছহীহ লিস সুনান ওয়াল মাসানীদ)
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ থাকা অবস্থায় সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনার হযরত যায়েদ ইবনে উমর আলাইহিস সালাম নাম মুবারক-এ একজন আওলাদ আলাইহিস সালাম তিনি বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

পরবর্তী মহাসম্মানিত আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ:
বর্ণিত রয়েছে, 
أن أم كلثوم تزوجت في بداية الأمر من عُمَر بن الخطاب ثم بعد موته تزوجت من ابن عمها ‌عون‌ بن جعفر بن أبي طالب. وكذلك تزوجت بعد وفاة عون من أخيه ‌محمد‌ وبعد وفاته تزوجت من أخيه الآخر ‌عبد الله‌.
অর্থ “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনার নিসবতে ‘আযীম শরীফ হয় সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যাম আলাইহিস সালাম উনার সাথে। উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনার নিসবতে আযীম শরীফ হয়, উনার চাচাতো ভাই হযরত ‘আঊন ইবনে জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার সাথে। তারপর উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর নিসবতে ‘আযীম শরীফ হয় হযরত ‘আঊন ইবনে জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার ভাই হযরত মুহম্মদ ইবনে জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার সাথে। অতঃপর উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর নিসবতে ‘আযীম শরীফ হয় হযরত ‘আঊন ইবনে জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার অপর ভাই হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার সাথে।”

কারবালার প্রান্তরে:
সিবত্বতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহ আলাইহাস সালাম তিনি ৬১ হিজরী শরীফ উনার ১০ই মুহররমুল হারাম শরীফ কারবালার প্রান্তরে উপস্থিত ছিলেন।
 
বেমেছাল শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَلِلّٰهِ الْعِزَّةُ وَلِرَسُوْلِهٖ وَلِلْمُؤْمِنِيْنَ وَلٰكِنَّ الْمُنٰفِقِيْنَ لَا يَعْلَمُوْنَ
অর্থ: “সমস্ত ইজ্জত তথা শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক একমাত্র যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য, উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার (এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের) জন্য এবং (উনাদের সাথে নিসবত স্থাপন করার কারণে) মু’মিনীন উনাদের জন্য। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু মুনাফিক্বরা তা জানে না, বুঝে না।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মুনাফিকূন শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৮)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত ইজ্জত-সম্মান, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের একক মালিক। উনার পর উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সমস্ত ইজ্জত-সম্মান, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের মালিক। সুবহানাল্লাহ! আর উনাদের সাথে নিসবত স্থাপন করার কারণে মু’মিনগণ উনারও সম্মানিত।” সুবহানাল্লাহ!
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মু’মিন বলতে একমাত্র যিনি খালিক্ব¡ মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলেই উদ্দেশ্য। সুবহানাল্লাহ! উনারা সকলেই মু’মিন। উনারা প্রত্যেকেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন। সুবহানাল্লাহ! কোনো হযরত নবী আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক দেয়া হয়নি, কোনো হযরত রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত রিসালাত মুবারক দেয়া হয়নি; যতক্ষণ পর্যন্ত না উনারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক আনার পরেই মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! এ প্রসঙ্গে স্বয়ং যিনি খালিক্ব¡ মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاِذْ اَخَذَ اللهُ مِيْثَاقَ النَّبِـيّٖنَ لَمَاۤ اٰتَيْتُكُمْ مِّنْ كِتٰبٍ وَّحِكْمَةٍ ثُـمَّ جَآءَكُمْ رَسُوْلٌ مُّصَدِّقٌ لِّـمَا مَعَكُمْ لَتُؤْمِنُنَّ بِهٖ وَلَتَنْصُرُنَّهٗ قَالَ ءَاَقْرَرْتُـمْ وَاَخَذْتُـمْ عَلـٰى ذٰلِكُمْ اِصْرِىْ قَالُوْاۤ اَقْرَرْنَا قَالَ فَاشْهَدُوْا وَاَنَا مَعَكُمْ مِّنَ الشّٰهِدِيْنَ. فَمَنْ تَوَلّٰى بَعْدَ ذٰلِكَ فَاُولٰٓـئِكَ هُمُ الْفٰسِقُوْنَ.
অর্থ: “আর (আমার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি স্মরণ করুন ঐ সময়ের কথা) যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের থেকে অঙ্গীকার মুবারক গ্রহণ করলেন যে, আপনাদেরকে সম্মানিত কিতাব মুবারক ও হিকমত মুবারক দেয়া হবে। অতঃপর আপনাদের নিকট একজন মহাসম্মানিত রসূল তথা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করবেন এবং তিনি আপনাদেরকে ও আপনাদের কাছে যা কিছু রয়েছে সমস্ত কিছুর তাছদীক্ব বা সত্যায়ন করবেন। আপনারা অবশ্যই অবশ্যই উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক আনবেন এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবেন। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, আপনারা কি তা স্বীকার করে নিলেন এবং এ মর্মে আমার সম্মানিত ওয়াদা মুবারক গ্রহণ করলেন? উনারা বললেন, আমরা স্বীকার করে নিলাম। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, তাহলে আপনারা সকলে সাক্ষী থাকুন এবং আমিও আপনাদের সাথে সাক্ষী রইলাম। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যে এই সম্মানিত ওয়াদা মুবারক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে অর্থাৎ ওয়াদা মুবারক উনার খিলাফ করবে, তারাই হচ্ছে ফাসিক্ব তথা চরম নাফরমান, কাট্টা কাফির।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আল ইমরান শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৮১-৮২) 
সেটাই সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খ¦মিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, 
اِنَّا مِنَ اللهِ بِـمَكَانٍ وَّمَنْزِلَةٍ رَّفِيْعَةٍ فَلَوْ لَا نَـحْنُ مَا خَلَقَ اللهُ تَعَالـٰى سَـمَاءً وَّلَا اَرْضًا وَّلَا جَنَّةً وَّلَا نَارًا وَّلَا شَـمْسًا وَّلَا قَمَرًا وَّلَا جِنِّيًّا وَّلَا اِنْسِيًّا.
অর্থ: “ নিশ্চয়ই যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে আমাদের এমন সুউচ্চ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাকান ও মাক্বাম মুবারক রয়েছেন যে, আমরা যদি না হতাম, তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি আসমান-যমীন, জান্নাত-জাহান্নাম, সূর্য-চন্দ্র এবং জিন-ইনসান কোনো কিছুই সৃষ্টি করতেন না।” সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খ¦মিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো বলেন, 
اِنَّ لَنَا عِنْدَ اللهِ مَنْزِلَةً وَّمَكَانًا رَّفِيْعًا وَلَوْلَا نَـحْنُ لَـمْ يـَخْلُقِ اللهُ اَرْضًا وَلَا سَـمَاءً وَلَا جَنَّةً وَلَا نَارًا وَلَا شَـمْسًا وَلَا قَمَرًا وَّلَا جِنِّيًّا وَّلَا اِنْسِيًّا وَلَا بَرًّا وَلَا بـَحْرًا وَلَا سَهْلًا وَلَا جَبَلًا وَلَا رَطْبًا وَلَا يَابِسًا وَلَا حُلْوًا وَلَا مُرًّا وَلَا مَاءً وَلَا نَبَاتًا وَلَا شَجَرًا وَاخْتَرَعْنَا اللهُ مِنْ نُّوْرِهٖ وَلَا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে আমাদের এমন সুউচ্চ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাক্বাম মুবারক রয়েছেন যে, আমরা যদি সৃষ্টি না হতাম, তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি যমীন-আসমান, জান্নাত-জাহান্নাম, সূর্য-চন্দ্র, জিন-ইনসান, স্থল-সমুদ্র, সমভূমি-পাহাড়, ভিজা-শুকনা, মিষ্ট-তিক্ত, পানি, গাছপালা-তরুলতা কোনো কিছুই সৃষ্টি করতেন না। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক থেকে তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নূর মুবরাক থেকে সৃষ্টি মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! আমাদের সাথে কারো তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ!
 এজন্যই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اَنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُوْلُ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর ৬/৬০৬, ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)
ইমামুল মুহাদ্দিছীন মিনাল আউওয়ালিন ইলাল আখিরীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন যে, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে বলেছেন যে, আলোচ্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে- 
اَهْلُ بَيْتٍ نَـحْنُ
(আমরা আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম) বলেÑ আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে আমার নিজের অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছি।” সুবহানাল্লাহ!
সেটাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা ইরশাদ মুবারক করেন, 
لِـىْ وَلَنَا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقْتٌ لَّا يَسْعٰنِىْ فِيْهِ مَلَكٌ   مُّقَرَّبٌ وَلَا نَبِىٌّ مُّرْسَلٌ
অর্থ: ‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমার এবং আমাদের এমন একটি সময় রয়েছে, অর্থাৎ দায়েমীভাবে এমন নিছবত মুবারক রয়েছেন যেখানে কোনো নৈকট্যপ্রাপ্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের এবং হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের স্থান  সঙ্কুলান হয় না।’ সুবহানাল্লাহ ওয়া রসূলিহি ওয়া আহলি বাইতি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
সুতরাং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের দায়েমীভাবে এমন নিছবত মুবারক রয়েছেন যেখানে কোনো নৈকট্যপ্রাপ্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের এবং হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের স্থান  সঙ্কুলান হয় না। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সংযুক্ত এবং সম্পৃক্ত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরেই উনাদের মহাসম্মানিত মাক্বাম মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই একমাত্র খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত সৃষ্টি জগতের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি ঈমান আনা, উনাদেরক মুহব্বত করা তা’যীম-তাকরীম করা, উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া। সুবহানাল্লাহ! উনারাই হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে হাছিল করার একমাত্র উসীলা বা মাধ্যম। উনারা ব্যতীত খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে হাছিল করার দ্বিতীয় কোনো উসীলা বা মাধ্যম নেই। সুবহানাল্লাহ!
 সেটাই সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
نَحْنُ اٰلُ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ )نَحْنُ اَهْلُ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ( ونحن اَلْوَسِيْلَةُ اِلَى اللهِ وَلَا وَسِيْلَةَ اِلَى اللهِ اِلَّا عَنْ غَيْرِ طَرِيْقِنَا اَوْ مِنْ سِوَانَا.
অর্থ: “আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে পাওয়ার একমাত্র উসীলা। আমাদের পথ বা আমাদের ব্যতীত মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে পাওয়ার দ্বিতীয় কোনো উসীলা বা মাধ্যম নেই।” সুবহানাল্লাহ! (শরহে আক্বাইদে ত্বহাবী)
এ কারণেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ شَجَرَةُ النُّبُوَّةِ وَمَعْدِنُ الرِّسَالَـةِ لَيْسَ اَحَدٌ مِّـنَ الْـخَلَائِقِ يَفْضُلُ اَهْلَ بَيْـتِـىْ غَيْرِىْ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র  হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমরা সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার সম্মানিত বৃক্ষ মুবারক এবং সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার সম্মানিত খনি মুবারক। সুবহানাল্লাহ! সমগ্র সৃষ্টি জগতে একমাত্র আমি ব্যতীত দ্বিতীয় আর কেউ নেই, যে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র  হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সমকক্ষতা দাবী করে। অর্থাৎ সমগ্র সৃষ্টি জগতে আমার পরেই আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র  হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক, ফযীলত মুবারক।” সুবহানাল্লাহ!  
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো ক্বিয়াস বা তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, কানযুল উম্মাল ১২/১০৪, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/২৪৯৫০, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যায় সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খ¦মিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন,
 اِنَّا نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ مَنْ قَاسَ بِنَا اَحَدًا فَقَدْ كَفَرَ
অর্থ: “নিশ্চয়ই আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো ক্বিয়াস বা তুলনা করা যাবে না। সুবহানাল্লাহ! যে ব্যক্তি আমাদের সাথে অন্য কাউকে তুলনা করবে, সে কুফরী করবে।” সুব্হানা মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
সুতরাং যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার পরেই উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মাক্বাম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর  নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র  হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত মাক্বাম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র  হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পরে সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ তামাম সৃষ্টি জগতের সম্মানিত মাক্বাম মুবারক। কাজেই রই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র  হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে সৃষ্টি জগতের কারো তুলনা দেয়া যাবে না। সুবহানাল্লাহ! উনাদের সাথে সৃষ্টি জগতের কারো তুলনা দেয়া, সুস্পষ্ট কুফরী। সুবহানাল্লাহ! যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। যা কস্মিনকালেও ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় তিনি শুধু যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবত্বতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহ আলাইহাস সালাম তিনি ৭৩ হিজরী শরীফ উনার ১৪ই শাওওয়াল শরীফ ইয়াওমুল আরবিয়া শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৬৬ বছর ৭ মাস ৪ দিন। সুবহানাল্লাহ!
বর্ণিত রয়েছে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহ আলাইহাস সালাম তিনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার জীবদ্দশায় উনার নিসবতে আযীম শরীফ-এ থাকা অবস্থায় তিনি এবং উনার সম্মানিত আওলাদ হযরত যায়েদ আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা একই সময় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। 

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ:
বর্ণিত রয়েছে,
أن أم كلثوم توفيت في الشام.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহ আলাইহাস সালাম তিনি শাম দেশে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন।”
ইবনে বতুতা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি লিখেছেন, 
تقع مقبرة أم كلثوم بنت علي بن ابي طالب قرب مدينة الشام وعلي بعد فرسخ منها. 
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ শাম শহরের নিকটবর্তী, সে শহর থেকে এক ফারসখা দূরে।”
আরো বর্ণিত রয়েছে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ দামেশ্কের আরভুইয়া গ্রামের বাবে ছগীর কবরস্থানে অবস্থিত।

মহাসম্মানিত নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহাস সালাম উনার মহসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের ৪ বছর ২ দিন পর ১১ হিজরী সনের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই রবী‘উল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৪ বছর ২ দিন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত ১১ হিজরী সনের সম্মানিত ৩রা রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আ’যীম শরীফ বা’দ আছর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহাস সালাম উনার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৪ বছর ৫ মাস ২৩ দিন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত আযীমুশ শান প্রথম নিসবতে আযীম শরীফ:
কিতাব-এ বর্ণিত রয়েছে,
وخطبها أمير المؤمنين عمر بن الخطاب رضي الله عنه إلى عليّ فقال إنها صغيرة فقال له زوجنيها يا أبا الحسن فإنّي أرصد من كرامتها ما لا يرصده أحد فقال له علي رضي الله عنه أنا أبعثها إليك فإن رضيتها فقد زوجتكها فبعثها إليه بردّ وقال لها قولي له هذا الرّدّ الّذي قلت لك فقالت ذلك لعمر فقال قولي له رضيت رضي الله عنك
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ করার বিষয়ে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার নিকট প্রস্তাব পেশ করেন। তখন তিনি বলেন, নিশ্চয়ই দুনিয়াবী দৃষ্টিতে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনার সম্মানিত বসয় মুবারক অল্প। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, হে সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল হাসান আলাইহিস সালাম! দয়া করে আপনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনাকে আমার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ সম্পন্ন করে দিন। কেননা, নিশ্চয়ই সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনার সম্মানার্থে আমি এমনভাবে প্রতীক্ষা করছি, যেরূপ প্রতীক্ষা আর কেউ করেনি। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে বললেন, আমি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনাকে আপনার নিকট পাঠাবো। যদি আপনি উনাকে খুশি করতে পারেন, তাহলে অবশ্যই আমি উনাকে আপনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ দিবো। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নিকট জবাব দিয়ে পাঠালেন। আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনাকে বলে দিলেন যে, আপনি সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে এই জবাবের কথা বলবেন, যা আমি আপনাকে বললাম। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম তা সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নিকট বললেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, দয়া করে আপনি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে বলুন যে- আমি খুশি হয়েছি, মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার প্রতি খুশি হউন।” সুবহানাল্লাহ! (ইমতা‘উল আসমা’ ৫/৩৬৯)
‘মুসনাদুল ফারূক্ব’ নামক কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, 
أنَّ عمرَ بن الخطاب رضي الله عنه لما خَطَب أُمَّ كلثوم بنتَ عليِّ بنِ أبي طالب، قال له عليٌّ رضي الله عنه إنها صغيرةٌ فقال إني سَمِعتُ رسولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يقول كلُّ سَبَبٍ وَنَسَبٍ منقطعُ يومَ القيامةِ إلا سَبَبي وَنَسَبيগ্ধ، فأحببتُ أن يكونَ لي من رسولِ الله صلى الله عليه وسلم سَبَبٌ وَنَسَبٌ. فزوَّجه عليّ رضي الله عنه
অর্থ: “যখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ করার বিষয়ে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার নিকট প্রস্তাব পেশ করেন,  তখন সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, নিশ্চয়ই দুনিয়াবী দৃষ্টিতে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনার সম্মানিত বসয় মুবারক অল্প। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, নিশ্চয়ই আমি শুনেছি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, ‘প্রত্যেক সম্পর্ক এবং বংস কিয়ামতের দিন ছিন্ন হয়ে যাবে। একমাত্র আমার সম্পর্ক মুবারক এবং বংস মুবারক ব্যতীত। তাই আমি এটা পছন্দি করি, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সববগত এবং নসবগত দিক থেকে আমার একটা নিসবত মুবারক থাকুক। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ সম্পন্ন করে দেন।” সুবহানাল্লাহ!
মূলত, ১৭ হিজরী শরীফ-এ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ সম্পন্ন হয়। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ১০ বছর। সুবহানাল্লাহ!
বর্ণিত রয়েছে, 
أن زواجهما كان في شهر ذي القعدة في السنة السابعة عشرة للهجرة. 
অর্থ: “নিশ্চয়ই উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৭ হিজরী শরীফ উনার সম্মানিত যিলক্বদ শরীফ মাসে।” সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত মোহরানা মুবারক
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
 عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْأَنْصَارِيِّ قَالَ ্রتَزَوَّجَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ أُمَّ كُلْثُومٍ بِنْتَ فَاطِمَةَ بِنْتِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى أَرْبَعِينَ أَلْفِ دِرْهَمٍগ্ধ
অর্থ: “হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে যাহরা আলাইহিমাস সালাম উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি ৪০ হাজার দিরহাম সম্মানিত মোহরানা মুবারক দিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (ফাওয়াইদুশ শাহীর ১/১৬৬, মুখতাছারু তারীখে দিমাশক্ব ৩/২৪৫, আল মুন্তায¦াম ফী তারীখিল মুলূক ওয়াল উমাম ৪/২৩৭ ইত্যাদি)
অপর বর্ণনায় রয়েছে,
أما السيدة أم كلثوم بنت فاطمة فتزوجها عمر بن الخطاب وكان مهرها أربعين ألف دينار.
অর্থ: “আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে যাহরা আলাইহিমাস সালাম। উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ করেন এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে যাহরা আলাইহিমাস সালাম উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি ৪০ হাজার দীনার (স্বর্ন মুদ্রা) সম্মানিত মোহরানা মুবারক দেন।” সুবহানাল্লাহ! (রহমতুল্লিল আলামীন ১/৩৬৩)

সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খুশি মুবারক প্রকাশ:
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
أَنَّهُ لَمَّا تَزَوَّجَ أُمَّ كُلْثُومٍ بِنْتَ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ أَمَا وَاللَّهِ مَا بِي إِلَّا إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ كُلُّ سبَبٍ ونَسب فَإِنَّهُ مُنْقَطِعٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلَّا سَبَبِي وَنَسَبِي.
অর্থ: “নিশ্চয়ই সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনাকে (সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম) তিনি যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ করেন, তখন তিনি বলেন- সাবধান! মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ করার প্রয়োজন ছিলো না। তবে নিশ্চয়ই আমি শুনেছি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, ‘প্রত্যেক সম্পর্ক এবং বংস কিয়ামতের দিন ছিন্ন হয়ে যাবে। একমাত্র আমার সম্পর্ক মুবারক এবং বংশ মুবারক ব্যতীত।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে ইবনে কাছীর ৫/৪৯৬)
অপর বর্ণনায় রয়েছে,
فجاء عمر رضي الله عنه إلى مجلس المهاجرين في الروضة وكان يجلس فيها المهاجرون الأولون فجلس إليهم فقال رفئوني فقالوا بما ذا يا أمير المؤمنين قال تزوجت أم كلثوم بنت علي بن أبي طالب.
অর্থ: “অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার পাশে হযরত মুহাজির ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের বসার স্থানে যেখানে হযরত মুহাজিরুল আউওয়ালূন রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা বসেছিলেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি উনাদের নিকট বসে বললেন, আমাকে সম্মান করুন। তখন উনারা বললেন, হে সাইয়্যিদুনা হযরত আমীরুল মু’মিনীন আলাইহিস সালাম! কী কারণে? সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, কারণ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনাকে আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ করিছে।” সুবহানাল্লাহ! (ইমতা‘উল আসমা’ ৫/৩৬৯)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
وعَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رضي الله عنهما قَالَ: لَمَّا تَزَوَّجَ عُمَرُ رضي الله عنه أُمَّ كُلْثُومٍ بِنْتَ عَلِيٍّ رضي الله عنه قَالَ أَلَا تُهَنُّونِي؟ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ كُلُّ سَبَبٍ وَنَسَبٍ مُنْقَطِعٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ غَيْرَ سَبَبِي وَنَسَبِي
অর্থ: “হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে নিসবতে আযীম শরীফ করেন, তখন তিনি বলেন, আপনারা কি আমাকে অভিনন্দন জানাবেন না? নিশ্চয়ই আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন সমস্ত সবব তথা সম্পর্ক এবং নসব বিছিন্ন হয়ে পড়বে একমাত্র আমার সবব এবং নসব মুবারক ব্যতীত। সুবহানাল্লাহ! (আল জামি‘উছ ছহীহ লিস সুনান ওয়াল মাসানীদ)
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ থাকা অবস্থায় সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনার হযরত যায়েদ ইবনে উমর আলাইহিস সালাম নাম মুবারক-এ একজন আওলাদ আলাইহিস সালাম তিনি বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

পরবর্তী মহাসম্মানিত আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ:
বর্ণিত রয়েছে, 
أن أم كلثوم تزوجت في بداية الأمر من عُمَر بن الخطاب ثم بعد موته تزوجت من ابن عمها ‌عون‌ بن جعفر بن أبي طالب. وكذلك تزوجت بعد وفاة عون من أخيه ‌محمد‌ وبعد وفاته تزوجت من أخيه الآخر ‌عبد الله‌.
অর্থ “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনার নিসবতে ‘আযীম শরীফ হয় সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যাম আলাইহিস সালাম উনার সাথে। উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিমাস সালাম উনার নিসবতে আযীম শরীফ হয়, উনার চাচাতো ভাই হযরত ‘আঊন ইবনে জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার সাথে। তারপর উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর নিসবতে ‘আযীম শরীফ হয় হযরত ‘আঊন ইবনে জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার ভাই হযরত মুহম্মদ ইবনে জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার সাথে। অতঃপর উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর নিসবতে ‘আযীম শরীফ হয় হযরত ‘আঊন ইবনে জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার অপর ভাই হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার সাথে।”

কারবালার প্রান্তরে:
সিবত্বতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহ আলাইহাস সালাম তিনি ৬১ হিজরী শরীফ উনার ১০ই মুহররমুল হারাম শরীফ কারবালার প্রান্তরে উপস্থিত ছিলেন।
 
বেমেছাল শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَلِلّٰهِ الْعِزَّةُ وَلِرَسُوْلِهٖ وَلِلْمُؤْمِنِيْنَ وَلٰكِنَّ الْمُنٰفِقِيْنَ لَا يَعْلَمُوْنَ
অর্থ: “সমস্ত ইজ্জত তথা শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক একমাত্র যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য, উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার (এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের) জন্য এবং (উনাদের সাথে নিসবত স্থাপন করার কারণে) মু’মিনীন উনাদের জন্য। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু মুনাফিক্বরা তা জানে না, বুঝে না।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মুনাফিকূন শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৮)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত ইজ্জত-সম্মান, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের একক মালিক। উনার পর উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সমস্ত ইজ্জত-সম্মান, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের মালিক। সুবহানাল্লাহ! আর উনাদের সাথে নিসবত স্থাপন করার কারণে মু’মিনগণ উনারও সম্মানিত।” সুবহানাল্লাহ!
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মু’মিন বলতে একমাত্র যিনি খালিক্ব¡ মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলেই উদ্দেশ্য। সুবহানাল্লাহ! উনারা সকলেই মু’মিন। উনারা প্রত্যেকেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন। সুবহানাল্লাহ! কোনো হযরত নবী আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক দেয়া হয়নি, কোনো হযরত রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত রিসালাত মুবারক দেয়া হয়নি; যতক্ষণ পর্যন্ত না উনারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক আনার পরেই মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! এ প্রসঙ্গে স্বয়ং যিনি খালিক্ব¡ মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاِذْ اَخَذَ اللهُ مِيْثَاقَ النَّبِـيّٖنَ لَمَاۤ اٰتَيْتُكُمْ مِّنْ كِتٰبٍ وَّحِكْمَةٍ ثُـمَّ جَآءَكُمْ رَسُوْلٌ مُّصَدِّقٌ لِّـمَا مَعَكُمْ لَتُؤْمِنُنَّ بِهٖ وَلَتَنْصُرُنَّهٗ قَالَ ءَاَقْرَرْتُـمْ وَاَخَذْتُـمْ عَلـٰى ذٰلِكُمْ اِصْرِىْ قَالُوْاۤ اَقْرَرْنَا قَالَ فَاشْهَدُوْا وَاَنَا مَعَكُمْ مِّنَ الشّٰهِدِيْنَ. فَمَنْ تَوَلّٰى بَعْدَ ذٰلِكَ فَاُولٰٓـئِكَ هُمُ الْفٰسِقُوْنَ.
অর্থ: “আর (আমার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি স্মরণ করুন ঐ সময়ের কথা) যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের থেকে অঙ্গীকার মুবারক গ্রহণ করলেন যে, আপনাদেরকে সম্মানিত কিতাব মুবারক ও হিকমত মুবারক দেয়া হবে। অতঃপর আপনাদের নিকট একজন মহাসম্মানিত রসূল তথা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করবেন এবং তিনি আপনাদেরকে ও আপনাদের কাছে যা কিছু রয়েছে সমস্ত কিছুর তাছদীক্ব বা সত্যায়ন করবেন। আপনারা অবশ্যই অবশ্যই উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক আনবেন এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবেন। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, আপনারা কি তা স্বীকার করে নিলেন এবং এ মর্মে আমার সম্মানিত ওয়াদা মুবারক গ্রহণ করলেন? উনারা বললেন, আমরা স্বীকার করে নিলাম। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, তাহলে আপনারা সকলে সাক্ষী থাকুন এবং আমিও আপনাদের সাথে সাক্ষী রইলাম। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যে এই সম্মানিত ওয়াদা মুবারক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে অর্থাৎ ওয়াদা মুবারক উনার খিলাফ করবে, তারাই হচ্ছে ফাসিক্ব তথা চরম নাফরমান, কাট্টা কাফির।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আল ইমরান শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৮১-৮২) 
সেটাই সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খ¦মিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, 
اِنَّا مِنَ اللهِ بِـمَكَانٍ وَّمَنْزِلَةٍ رَّفِيْعَةٍ فَلَوْ لَا نَـحْنُ مَا خَلَقَ اللهُ تَعَالـٰى سَـمَاءً وَّلَا اَرْضًا وَّلَا جَنَّةً وَّلَا نَارًا وَّلَا شَـمْسًا وَّلَا قَمَرًا وَّلَا جِنِّيًّا وَّلَا اِنْسِيًّا.
অর্থ: “ নিশ্চয়ই যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে আমাদের এমন সুউচ্চ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাকান ও মাক্বাম মুবারক রয়েছেন যে, আমরা যদি না হতাম, তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি আসমান-যমীন, জান্নাত-জাহান্নাম, সূর্য-চন্দ্র এবং জিন-ইনসান কোনো কিছুই সৃষ্টি করতেন না।” সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খ¦মিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো বলেন, 
اِنَّ لَنَا عِنْدَ اللهِ مَنْزِلَةً وَّمَكَانًا رَّفِيْعًا وَلَوْلَا نَـحْنُ لَـمْ يـَخْلُقِ اللهُ اَرْضًا وَلَا سَـمَاءً وَلَا جَنَّةً وَلَا نَارًا وَلَا شَـمْسًا وَلَا قَمَرًا وَّلَا جِنِّيًّا وَّلَا اِنْسِيًّا وَلَا بَرًّا وَلَا بـَحْرًا وَلَا سَهْلًا وَلَا جَبَلًا وَلَا رَطْبًا وَلَا يَابِسًا وَلَا حُلْوًا وَلَا مُرًّا وَلَا مَاءً وَلَا نَبَاتًا وَلَا شَجَرًا وَاخْتَرَعْنَا اللهُ مِنْ نُّوْرِهٖ وَلَا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে আমাদের এমন সুউচ্চ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাক্বাম মুবারক রয়েছেন যে, আমরা যদি সৃষ্টি না হতাম, তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি যমীন-আসমান, জান্নাত-জাহান্নাম, সূর্য-চন্দ্র, জিন-ইনসান, স্থল-সমুদ্র, সমভূমি-পাহাড়, ভিজা-শুকনা, মিষ্ট-তিক্ত, পানি, গাছপালা-তরুলতা কোনো কিছুই সৃষ্টি করতেন না। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক থেকে তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নূর মুবরাক থেকে সৃষ্টি মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! আমাদের সাথে কারো তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ!
 এজন্যই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اَنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُوْلُ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর ৬/৬০৬, ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)
ইমামুল মুহাদ্দিছীন মিনাল আউওয়ালিন ইলাল আখিরীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন যে, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে বলেছেন যে, আলোচ্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে- 
اَهْلُ بَيْتٍ نَـحْنُ
(আমরা আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম) বলেÑ আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে আমার নিজের অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছি।” সুবহানাল্লাহ!
সেটাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা ইরশাদ মুবারক করেন, 
لِـىْ وَلَنَا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقْتٌ لَّا يَسْعٰنِىْ فِيْهِ مَلَكٌ   مُّقَرَّبٌ وَلَا نَبِىٌّ مُّرْسَلٌ
অর্থ: ‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমার এবং আমাদের এমন একটি সময় রয়েছে, অর্থাৎ দায়েমীভাবে এমন নিছবত মুবারক রয়েছেন যেখানে কোনো নৈকট্যপ্রাপ্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের এবং হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের স্থান  সঙ্কুলান হয় না।’ সুবহানাল্লাহ ওয়া রসূলিহি ওয়া আহলি বাইতি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
সুতরাং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের দায়েমীভাবে এমন নিছবত মুবারক রয়েছেন যেখানে কোনো নৈকট্যপ্রাপ্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের এবং হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের স্থান  সঙ্কুলান হয় না। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সংযুক্ত এবং সম্পৃক্ত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরেই উনাদের মহাসম্মানিত মাক্বাম মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই একমাত্র খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত সৃষ্টি জগতের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি ঈমান আনা, উনাদেরক মুহব্বত করা তা’যীম-তাকরীম করা, উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া। সুবহানাল্লাহ! উনারাই হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে হাছিল করার একমাত্র উসীলা বা মাধ্যম। উনারা ব্যতীত খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে হাছিল করার দ্বিতীয় কোনো উসীলা বা মাধ্যম নেই। সুবহানাল্লাহ!
 সেটাই সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
نَحْنُ اٰلُ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ )نَحْنُ اَهْلُ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ( ونحن اَلْوَسِيْلَةُ اِلَى اللهِ وَلَا وَسِيْلَةَ اِلَى اللهِ اِلَّا عَنْ غَيْرِ طَرِيْقِنَا اَوْ مِنْ سِوَانَا.
অর্থ: “আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে পাওয়ার একমাত্র উসীলা। আমাদের পথ বা আমাদের ব্যতীত মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে পাওয়ার দ্বিতীয় কোনো উসীলা বা মাধ্যম নেই।” সুবহানাল্লাহ! (শরহে আক্বাইদে ত্বহাবী)
এ কারণেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ شَجَرَةُ النُّبُوَّةِ وَمَعْدِنُ الرِّسَالَـةِ لَيْسَ اَحَدٌ مِّـنَ الْـخَلَائِقِ يَفْضُلُ اَهْلَ بَيْـتِـىْ غَيْرِىْ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমরা সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার সম্মানিত বৃক্ষ মুবারক এবং সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার সম্মানিত খনি মুবারক। সুবহানাল্লাহ! সমগ্র সৃষ্টি জগতে একমাত্র আমি ব্যতীত দ্বিতীয় আর কেউ নেই, যে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র  হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সমকক্ষতা দাবী করে। অর্থাৎ সমগ্র সৃষ্টি জগতে আমার পরেই আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র  হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক, ফযীলত মুবারক।” সুবহানাল্লাহ!  
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো ক্বিয়াস বা তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, কানযুল উম্মাল ১২/১০৪, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/২৪৯৫০, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যায় সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খ¦মিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন,
 اِنَّا نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ مَنْ قَاسَ بِنَا اَحَدًا فَقَدْ كَفَرَ
অর্থ: “নিশ্চয়ই আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো ক্বিয়াস বা তুলনা করা যাবে না। সুবহানাল্লাহ! যে ব্যক্তি আমাদের সাথে অন্য কাউকে তুলনা করবে, সে কুফরী করবে।” সুব্হানা মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
সুতরাং যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার পরেই উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মাক্বাম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর  নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র  হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত মাক্বাম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র  হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পরে সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ তামাম সৃষ্টি জগতের সম্মানিত মাক্বাম মুবারক। কাজেই রই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র  হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে সৃষ্টি জগতের কারো তুলনা দেয়া যাবে না। সুবহানাল্লাহ! উনাদের সাথে সৃষ্টি জগতের কারো তুলনা দেয়া, সুস্পষ্ট কুফরী। সুবহানাল্লাহ! যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। যা কস্মিনকালেও ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় তিনি শুধু যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবত্বতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহ আলাইহাস সালাম তিনি ৭৩ হিজরী শরীফ উনার ১৪ই শাওওয়াল শরীফ ইয়াওমুল আরবিয়া শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৬৬ বছর ৭ মাস ৪ দিন। সুবহানাল্লাহ!
বর্ণিত রয়েছে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহ আলাইহাস সালাম তিনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার জীবদ্দশায় উনার নিসবতে আযীম শরীফ-এ থাকা অবস্থায় তিনি এবং উনার সম্মানিত আওলাদ হযরত যায়েদ আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা একই সময় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। 

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ:
বর্ণিত রয়েছে,
أن أم كلثوم توفيت في الشام.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহ আলাইহাস সালাম তিনি শাম দেশে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন।”
ইবনে বতুতা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি লিখেছেন, 
تقع مقبرة أم كلثوم بنت علي بن ابي طالب قرب مدينة الشام وعلي بعد فرسخ منها. 
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ শাম শহরের নিকটবর্তী, সে শহর থেকে এক ফারসখা দূরে।”
আরো বর্ণিত রয়েছে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ দামেশ্কের আরভুইয়া গ্রামের বাবে ছগীর কবরস্থানে অবস্থিত।